শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০১১

ইচ্ছামতী

সীমান্তের ওপারে আটকে যাচ্ছে চোখ

মাঝে অর্গল খুলে

স্রোতস্বিনী মোহময়ী ইচ্ছামতী,

তোমার বুক চিরে দখলদারি সৈনিক

বিষাদ সুরে আকাশ বাতাস

প্রতিমা ভাসান;

সব তোমার স্রোতে মিলেমিশে একাকার

চোখ মুছে ঘরে ফেরে

সীমান্তের মানুষেরা

আর তুমি কুল প্লাবিত করে

অন্তহীন বয়ে চল নির্বিকার

স্রোতস্বিনী মোহময়ী ইচ্ছামতী।

ভালোবাসার কবিতা লিখবো না-আবুল হাসান

‘তোমাকে ভালোবাসি তাই ভালোবাসার কবিতা লিখিনি।
আমার ভালোবাসা ছাড়া আর কোনো কবিতা সফল হয়নি,
আমার এক ফোঁটা হাহাকার থেকে এক লক্ষ কোটি
ভালোবাসার কবিতার জন্ম হয়েছে।

আমার একাকীত্বের এক শতাংশ হাতে নিয়ে
তুমি আমার ভালোবাসার মুকুট পরেছো মাথায়!
আমাকে শোষণের নামে তৈরি করেছো আত্মরক্ষার মৃন্ময়ী যৌবন।
বলো বলো হে ম্লান মেয়ে,এতো স্পর্ধা কেন তোমার?

ভালোবাসার ঔরসে আমার জন্ম! অহংকার আমার জননী!
তুমি আমার কাছে নতজানু হও,তুমি ছাড়া আমি
আর কোনো ভূগোল জানি না,
আর কোনো ইতিহাস কোথাও পড়িনি!

আমার একা থাকার পাশে তোমার একাকার হাহাকার নিয়ে দাঁড়াও!
হে মেয়ে ম্লান মেয়ে তুমি তোমার হাহাকার নিয়ে দাঁড়াও!

আমার অপার করুণার মধ্যে তোমারও বিস্তৃতি!
তুমি কোন্ দুঃসাহসে তবে
আমার স্বীকৃতি চাও,হে ম্লান মেয়ে আমার স্বীকৃতি চাও কেন?
তোমার মূর্খতা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধে,পৃথিবীটা পুড়ে যাবে
হেলেনের গ্রীস হবে পুনর্বার আমার কবিতা!
এই ভয়ে প্রতিশোধস্পৃহায়
আজো আমি ভালোবাসার কবিতা লিখিনি
কোনোদিন ভালোবাসার কবিতা লিখিনি।

হে মেয়ে হে ম্লান মেয়ে তোমাকে ভালোবাসি তাই
ভালোবাসার কবিতা আমি কোনোদিন কখনো লিখবো না!’

ভালোবাসার কবিতা (২)

যদি প্রশ্ন করো বলে দিতে পারি
তোমার জন্য কত হাজার,
অযুত নিযুত ভাবনাময় সকাল।
তোমার দু'চোখের স্বপ্ন ছুঁতে ছুঁতে
কতশ' বলাকার পাখা মেলে চলা।

শহর যেখানে শান্ত হয়ে থাকে
সেই নদীটার ঝুলানো ব্রীজের কাছে
নক্ষত্রের মত জ্বলতে থাকা
আলোদের দেখতে থাকি।

তোমার প্রশ্নের অপেক্ষায় থাকি।
যদি বলো নদীর পাশে এলেই মনে হয়
সারাক্ষন ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকি তোমাকে।
হারিয়ে যাই নদীর স্বচ্ছ জলের নীচে।
দিই ডুবসাঁতার।

ফুলের গন্ধ ভেসে আসে কোথাও থেকে
একদম ছেলেবেলার কাঁঠাল চাঁপার মত।
সময় এর কাছে থেমে যাই কি আমরা?
আকাশে জ্বলতে থাকা তারাদের দিকে তাকিয়ে
তোমার প্রশ্নের অপেক্ষায় থাকি।

তুমি এলে
আগুন ঝরানো অনুভব নিয়ে বসে থাকি
তুমি আর আমি
পৃথিবীর পুরাতন মানব মানবী।
কান পেতে থাকি
যদি প্রশ্ন করো কতটুকু ভালোবাসি।

জানোতো
ভালোবাসার অমল বোধটুকু বুকে তুলে রাখা
সেতো তোমারই জন্য।
নিবীড়তায় বলা হয় কই ভালোবাসা ভালোবাসি!

চোখ মেলে ভালোবাসি।
চোখ বুজে ভালোবাসি।
নির্জনে ভালোবাসি
জনারণ্যে ভালোবাসি।
তোমার দেয়া স্বপ্ন ভালোবাসি
তোমার দেয়া রংধনু রং ভালোবাসি।
তোমার দেয়া নিত্যদিনের
কবিতা ও গান ভালোবাসি রাখাল ছেলে।

ভালো থেকো তুমি

ভালো থেকো তুমি
ভালো থেকো তুমি,
চলতি পথে, বাসে কিংবা অন্যকোন খানে,
যখনই দেখি,
বলি, "ভালো থেকো তুমি"।

হয়তো আমি ভালো নেই,
হয়তো পুরোনো দিনগুলো আমাকে লুকিয়ে কাঁদায়,
হয়তো তোমার জন্য লিখতে বসি,
সবাইকে হাসিমুখ দেখিয়ে, ভেতরে ভেঙ্গে পরি শক্ত আমি,
তারপরও বলি, "ভালো থেকো তুমি"।

এখনো আমি কিসের অপেক্ষায় থাকি,
বাজবেনা যেনেও ফোনটার দিকে তাকিয়ে,
দিন যায়, বেলা যায়,সন্ধ্যা ফুরায়,
তারপরও বলি, "ভালো থেকো তুমি"।

আমি জানি,
হয়তো আমার আর ভালো থাকা হবে না,
হয়তো স্মৃতিগুলো বুকে নিয়ে বেঁচে থাকবো,
সময়ের স্রোতে একদিন হারিয়ে যাবো,
তবুও বলি, "ভালো থেকো তুমি"

ভালবাসা এখন সস্তা হয়ে গেছে

এই ভালবাসা লাগবে ভালবাসা
ভালবাসা এখন সস্তা হয়ে গেছে
মুদি দোকানের দু’টাকা দামের মোমবাতি আর একটা দেশলাইয়ের মত
যে ফেরীওয়ালা তরকারী তরকারী বলে চিৎকার করে
তার খাঁচার পটল আর এক আঁটি ধনিয়া পাতার মত।

ভালবাসা এখন সুলভ হয়ে গেছে
একটা মিসকল আর হাওয়া বিক্রেতাদের অফপিক টাইমের মত
ব্যস্ত শহরে দৃশ্যমান ট্রাফিক জ্যামে যে মেয়েটি ধরনা দেয়
তার হাতে ধরা একটি বেলী ফুলের মালার মত।

ভালবাসা এখন আধুনিক হয়ে গেছে
ব্লাকবেরি আর থ্রি জি হ্যান্ডসেটের মত
তরুন চোকরাটা যে প্রতিমাসেই বদলায় তার মুটোফোনটা
তার হাতের বেখাপ্পা নতুন আইফোনটার মত।

ভালবাসা এখন রঙ্গীলা হয়ে গেছে
টানবাজারের গলিতে দাড়ানো পতিতার ঠোঁটের লিপষ্টিকের মত
বেওয়ালিরশ দেয়ালের গায়ে যে চিকারা বদলে যায় প্রতি রাতে
সেসব চিকার বাহারী রং পাল্টানোর মত।

ভালবাসা এখন সস্তা হয়ে গেছে
রাস্তায় বেরুলে শুনতে পাওয়া রিকশার কলিংবেলের মত
বর্ষায় ডোবার পাশের কচু পাতার উপর টলমল করা
কয়েক ফোঁটা সদ্য পড়া বৃষ্টির ফোঁটার মত।
আসলে ভালবাসাকে আমরাই সস্তা করে ফেলেছি।

অপরাজিতার ভালোবাসা

অপরাজিতার ভালোবাসা
তোমার একটু ছোঁয়া একটু আদর
একটু প্রেমের জন্যে ,
সারাটা দিন কাটে আমার
অপেক্ষার অরন্যে ।
সত্যিই তুমি সত্যিই জানি
আমায় ভালোবাসো ,
এইও জানি সারাটা দিন
আমায় অভিলাষো ।
জানতে কি চাও তোমার ডাকে
কেন ছুটে আসি?
ভালোবাসি বন্ধু তোমায়
নিজের চেয়েও বেশি ।
একতারাটা বলেছিলো
বাসতে ভালো তোমায় ,
জানতে কি চাও কেমন করে
কাটছে আমার সময়?
এমন একটা স্বপ্ন আমার
সত্যি কেন হয়না?
মন খারাপের দিন গুলো
কেন যে শেষ হয়না ?
জানতে কি চাও তোমার ডাকে
কেন ছুটে আসি?
ভালোবাসি বন্ধু তোমায়
নিজের চেয়েও বেশি ।
একটা প্রহর লেগেছিলো
ভালোবাসি বলতে,
সারাটা দিন কেটে গেলো
প্রহর গুনতে গুনতে ।
কেন তোমায় আমি তবু
নিজের করে পাইনা?
কিসের অভাব আছে আমার
সত্যি খুঁজে পাইনা ।
জানতে কি চাও তোমার ডাকে
কেন ছুটে আসি?
ভালোবাসি বন্ধু তোমায়
নিজের চেয়েও বেশি ।
তোমার একটু ছোঁয়া একটু আদর
একটু প্রেমের জন্যে ,
সারাটা দিন কাটে আমার
অপেক্ষার অরন্যে ।

ভালোবাসার কবিতা 1

কী ভালো আমার লাগে আমার সকালবেলায়,
হয়তোবা তোমার লজ্জারাঙা ঠোঁটের হাসি; একটু আদর।
নির্মল নীল শাড়ীর একটু ছোয়া, কী অসহ্য সুন্দর
কণ্ঠের অবাধ উন্মুক্ত তান। আমি বারবার মুগ্ধ হই।
দিগন্ত থেকে দিগন্তে; অন্ত থেকে অনন্তের পথে পা বাড়াই।

কী ভালো লাগে আমার তুমি যখন,
চারিদিকের সবুজ পাহাড়ে আঁকাবাঁকা, কুয়াশায় ধোঁয়াটে,
আস্তরণের আড়ালে দাড়িয়ে খিল-খিল হেসে ওঠ।
তোমার সেই উজ্জ্বল অপরূপ মুখ দেখে হয়তোবা আকাশ ,
নীল এই আকাশ- অভিমানে মুখ ফিরায়।

তুমি কি কখনো ভেবেছিলে এই হ্রদের ধারে
রূপোলি জলে শুয়ে-শুয়ে-এঁকে দিবে সোনালী চুম্বন।
সূর্যের চুম্বনে।-নীলের স্রোতে ঝরে পড়ছে অপরূপ ইন্দ্রধণু
তোমার আর আমার ভালোবাসার সাক্ষী তাঁরা।
দুটো প্রজাপতি কতদূর থেকে উড়ে আসছে জলের উপর দিয়ে।
- কী দুঃসাহস! তুমি হেসেছিলে আর আমি তোমার হাসি দেখছিলাম।

কী ভালো লেগেছিল।

ইচ্ছামতী

সীমান্তের ওপারে আটকে যাচ্ছে চোখ

মাঝে অর্গল খুলে

স্রোতস্বিনী মোহময়ী ইচ্ছামতী,

তোমার বুক চিরে দখলদারি সৈনিক

বিষাদ সুরে আকাশ বাতাস

প্রতিমা ভাসান;

সব তোমার স্রোতে মিলেমিশে একাকার

চোখ মুছে ঘরে ফেরে

সীমান্তের মানুষেরা

আর তুমি কুল প্লাবিত করে

অন্তহীন বয়ে চল নির্বিকার

স্রোতস্বিনী মোহময়ী ইচ্ছামতী।

নদীর গান

শুনতে পাচ্ছো নদীর গান
বয়, রাতের নিঝুমতায়
অলৌকিক
ওদিকে চাও যদি
আলোক মিছিলে দেখ
রাতের পথনটি
তাৎক্ষনিক

অন্য অবকাশে মহান মানুষ
হয়, নরম সুজানিতে
দার্শনিক
দাওয়ায় পড়ে থাকা
শিরায় গতি পায়
গলিপথের সেই
শৌভনিক

সেসব মুছে যাবে জেনেও
বলে যাও, এসব বৈভব
পৌরানিক
যা দিয়ে কোনদিন
শ্মশান নাথ আর
বানাবেনা বিভুতির
সিনক্রনিক।।

প্রেম পত্র

ই-মেলে তোমার চিঠি
কিছু অক্ষর, কিছু পঙতি বিলাস।
অথচ কাগজে গন্ধ ছুঁয়ে থাকো তুমি
স্পর্শ স্বাদ - নিপুন অনুপান
জ্বর যেন জট খুলে ছোট্ট চডুই।

গনকে তোমার প্রতিক্ষন
কমা, সেমি-কোলন
সবই নতুন শুভঙ্করী।


চিঠি লিখি।
স্বল্প তাপে কলমের ভাবনা নিয়ে
ভাববে যখন
পড়বে আমার পুরোনো চিঠি।


কোনও একদিন
আশেপাশে কেউ নেই
বিরহ যন্ত্রনা -- না থাক
ছট্ট এস এম এস
এই তো এত কাছে তুমি।


ফরসা আকাশ
মেঘেরই বা কি দায়
পিওন হবার।